এস এম ইউসুফ (রিয়াদ)::
রোহিঙ্গাদের যারা সহায়তা দিতে যাবেন তারা কয়েকটি জিনিস অবশ্যই মাথায় রাখবেন
১. জামাকাপড় দেয়ার দরকার নাই, তারা আমাদের জামাকাপড়ে অভ্যস্থ না। আমরা দেখেছি রাস্তায় হাজার হাজার জামাকাপড় পরে আছে, এগুলা তাদের কোনো কাজে আসবে না।
২. কোনোভাবেই রাস্তায় ট্রাক/গাড়ী থামিয়ে/চলন্ত অবস্থায় ত্রান দিবেন না, এভাবে দিলে হুড়োহুড়ি লেগে যায়। আমরা যাওয়ার আগের দিনও একজন ত্রানের গাড়ীর পিছনে ছুটতে গিয়ে গাড়ীর নিচে পরে মারা যায়। ত্রান দিতে হলে নির্দিষ্ট ক্যাম্পে গিয়ে দিয়ে আসুন। অযথা বিশৃংখলা সৃষ্টি করবেন না।
৩. যে ক্যাম্পে যাবেন সেখানে আগে লোক পাঠিয়ে ওদের আসলে কি কি দরকার সেটার লিস্ট করে আসুন। অযথা ফালতু জিনিস দিয়ে টাকার অপচয়ের মানে হয় না। যেমন বেশীরভাগ ক্যাম্পে টিউবওয়েল আর টয়লেটের তীব্র অভাব। সাথে পানি রাখার পাত্র, তেরপল এসবের অভাব। খোজ নিয়ে ঠিক করুন কি দিলে ওদের কাজে লাগবে।
৪. কুতুপালং সহ আশেপাশের এলাকায় সরকারী/ব্যক্তি/এনজিও/বিভিন্ন সংস্থার প্রচুর সাহায্য যায়, এমন জায়গা খুঁজে বের করুন যেখানে অপেক্ষাকৃত কম সাহায্য যাচ্ছে। যেমন আমরা থাইংখালী থেকে আরো সামনে ফারির বিল নামক স্থান থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত দুইটি স্পটে মোট ৯.৬০ টন চাল এবং ডালের বস্তা দিয়ে আসি। সেখান দিয়ে প্রতিদিন নতুন নতুন রোহিঙ্গা প্রবেশ করছে যারা অভুক্ত অবস্থায় আসছে। স্থানীয়রা তাদেরকে সাধ্যমতন রান্না করে খাওয়ায়, আমরা তাদের হাতে চাল, ডাল দিয়ে আসছি।
এমন কিছু আপনারাও খুঁজে বের করতে পারেন।
সাইফুল ইসলাম একজন প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে বলেন, “আসলেই ওদের কাপড়ের চাহিদা খুবই কম, আমি এটার প্রত্যক্ষদর্শী। গত ১৬ সেপ্টেম্বর রায়পুর উপজেলা সম্মিলিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা ৫ ট্রাক ত্রাণ নিয়ে যাই,যার মধ্যে জামাকাপড়, খাদ্য সামগ্রী, পানি, মোম বাতী, গ্যাস লাইট,তাবু করার জন্য তেরপাল ইত্যাদি।ওদের খাদ্য সামগ্রী এবং তাবু করার জন্য তেরপাল এগুলোরই চাহিদা বেশি। এক বস্তা কাপড় দিলে ওখান থেকে বেচে ১টা বা ২টা নিয়ে বাকিগুলো রাস্তায় ফেলে দেয়।
এ ব্যাপারে কাউসার আরিফ, একজন একটিভিস্টের পরামর্শ হলঃ
যারা টেকনাফ যাচ্ছেন তাদের জন্য বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে আমার কিছু পরামর্ষ(যে গুলো আমি করেছি) রইলো!
#ত্রানের চেয়ে নগদ টাকা দেয়ার প্রতি বেশী গুরুত্ব দিন
#পরিমানে অল্প হলেও নতুন কাপড় দিন
#সীমান্ত এলাকা ঘুরে ঘুরে ত্রান দিন
#ব্যাগে শুকনো খাবার রাখুন, যারা মাত্র বাংলাদেশে আসছেন তাদের যাতায়াতের জন্য নগদ টাকা দিন
#কখনোই লোকালয়ে পকেটে হাত বা টাকা বের করবেন না। এমন অবস্থা হবে যেন আপনাকে ছিড়ে খাবে(না খেয়ে থাকলে যা হয়)
#বাচ্চাদের জন্য আলাদা কাপড় নিন
#মহিলাদের জন্য নতুন থামি,ছেলেদের জন্য লুঙ্গী নিন
#যারা ত্রান দিবেন তারা টোকেন সরবারহ করুন তা না হলে একজন বার বার পাবে
#গাড়ি থেকে ঢিল দিয়ে কোন খাবার দিবেন না
#ব্যাংক থেকে ১০০ টাকার নোট করে নিয়ে যাবেন
#মেডিকেল ক্যাম্প করলে মেয়ে ডাক্তার সাথে নিবেন
#যারা ঢাকা থেকে যাচ্ছেন তারা অব্যশই স্থানীয় যারা চাটগা ভাষা বোঝে তাদের সাথে রাখবেন
#পানি ও স্যালাইয়েনের ব্যাবস্থা করবেন
#কোন অবস্থাতেই লোকাল কোন লোকের হাতে টাকা দিবেন না
#রাস্তায় ত্রান দিবেন না কারন এর কারনে অনেকে হুমড়ি খেয়ে পড়ে।আর রাস্তার সাথে হওয়ায় অনেকে রোড এক্সিডিন্টে মারা যাচ্ছে।
#রাতের বেলা বের হন।দেখবেন একা একা অনেক মহিলা ছোট বাচ্চা নিয়ে জঙ্গলের ধারে বসে আছে,তাদের হাতে কাপড়/টাকা/খাবার তুলে দিন
#কেউ পুরাতন কাপড় নিবেন না
#ঘড় বানানোর জন্য ত্রিপল দিন
#টিওবওয়েল ও স্যানিটেশনের প্রতি গুরুত্ব দিন
ইনশাআল্লাহ আরো ভাল ভাবে বিস্তারিত লিখবো