নবকণ্ঠ ডেস্কঃ একাত্তর এর যুদ্ধাপরাধ ও সম্পদ ফেরতের দাবিসহ একাধিক ঐতিহাসিক ইস্যুতে আলোচনা করতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে এসব বিষয়ে প্রাথমিক সমঝোতা হয়। এছাড়া অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানো এবং আটকে পড়া পাকিস্তানি নাগরিকদের প্রত্যাবাসনের কথাও উঠেছে।
১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে স্থানান্তরিত সম্পদ ফেরত চেয়েছে ঢাকা। পাকিস্তান আলোচনা চালিয়ে যেতে রাজি হলেও এখনই কোনো চুক্তি হয়নি। ১৯৭১-এর গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের জন্য “সাধারণ ক্ষমা” চাওয়ার বিষয়ে ইসলামাবাদের সম্মতিকে বাংলাদেশ একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখছে। পাশাপাশি বাংলাদেশে বসবাসরত ৩ লাখ ২৫ হাজার পাকিস্তানি, মূলত বিহারি সম্প্রদায়ের লোকজন, তাদের ফেরত নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে চায় ইসলামাবাদ। এবং আরও আশার খবর বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং সরাসরি ফ্লাইট চালুর মাধ্যমে সম্পর্ক উন্নয়নে সম্মত হয়েছে দুই দেশ। শিগগিরই ঢাকা-ইসলামাবাদ সরাসরি ফ্লাইট চালু হতে পারে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দীন জানান, “জাতীয় স্বার্থ ও ১৯৭১-এর চেতনা মাথায় রেখেই আমরা পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চাই। তবে কোনোভাবেই ন্যায়বিচারের প্রশ্নে আপস নয়।” পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করে বলেন, “আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। সম্পর্ক উন্নয়নে আমরা আন্তরিক।”
এই আলোচনা দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের জটিলতার অবসান ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ঐতিহাসিক দাবিগুলোর বাস্তবায়নই আসল চ্যালেঞ্জ। পাকিস্তান কতটা দায়িত্ব স্বীকার করে তা এখনও অনিশ্চিত। এদিকে, বিহারি প্রত্যাবাসন ও ফ্লাইট চালু হলে মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বাড়তে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।
এই বৈঠককে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে দেখলেও এর সাফল্য নির্ভর করছে আলোচনার ধারাবাহিকতা ও সদিচ্ছার উপর।
-191
নিউজের ©সর্বস্বত্ব নবকণ্ঠ কর্তৃক সংরক্ষিত। সম্পূর্ণ বা আংশিক কপি করা বেআইনী , নিষিদ্ধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।