ফ্রান্সে বিদেশীর সংখ্যা ৪০ লাখ

france

২০১৫ সালের জরিপে প্রকাশ ফ্রান্সে ৪০ লাখ বিদেশী নাগরিক রয়েছে । এদের মধ্যে ২৭ লাখ ৩৪ হাজার ৪১৩ জনের বৈধ অনুমতি পত্র আছে। ফ্রান্সে শরনার্থী হিসেবে আবেদনকারীদের মধ্যে দুই লাখ ১২ হাজার ৩৬৫ জন প্রাথমিক পর্যায়ে দেয়া ত্রৈমাসিক অনুমোদনপত্র পেয়েছে। বিদেশীদের মধ্যে ৮৬ হাজার ৬০৮ জন জাতীয়তা পেয়েছেন। ২৮ হাজার ৫২৯ জন বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভিবাসী হিসেবে সমন্বিত হয়েছে। ২৬ হাজার ৭০০ জনের রাজনৈতিক আশ্রয় আবেদন মঞ্জুর হয়েছে।  এবং ৩১ লাখ ৯৭ হাজার ৫০৫ জন ফ্রান্সে প্রবেশের জন্য ভিসা পেয়েছেন। পাশাপাশি অবৈধ অবস্থানকারী ২৯ হাজার ৫৯৬ জন ফ্রান্স ত্যাগে বাধ্য হয়েছে।

ফ্রান্সের বিদেশী নাগরিক বিষয়ক অধিদপ্তর বা la direction générale des étrangers en France (DGEF)  সম্প্রতি এসব তথ্য প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত তথ্যমতে, ২০১৫ সালে রাজনৈতিক আশ্রয় আবেদনকারীর সংখ্যা পুর্বের বছরের চেয়ে ০,৭% বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক অস্থিরতার কারনে এ সংখ্যা বেড়েছে বলে ধারণা করা হয়। এদের মধ্যে বৈদেশিক ছাত্র/ছাত্রী এবং পরিবারের সঙ্গে মিলিত হবার জন্য ৬৬ হাজার ৫২০ জন রয়েছে। স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হবার জন্য ২০১৫ সালে ১২ হাজার বিদেশী নাগরিক বৈধ অনুমতি পেয়েছে।

৮৬ হাজার ৬০৮ জন জাতীয়তা পেয়েছে:

জাতীয়তা প্রদানের ক্ষেত্রে ফ্রান্সের ইতিহাসে ২০০৯ এবং ২০১০ সালে ৯০ হাজার আবেদনকারী জাতীয়তা পেয়েছিলো। এরপর জাতীয়তা পাওয়ার হার কমে যায়। ২০১৩ সালে ৭০ হাজার আবেদনকারী ফরাসী জাতীয়তা পেয়েছিলেন। ২০১৫ সালে এ সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ৮৬ হাজার ৬০৮ জনে। ফরাসী জাতীয়তা পেয়েছেন ২৫ হাজার ৪৪ জন বিবাহসুত্রে ( এ সংখ্যা পুবের বছরের তুলনায় ২৭% বেশী ) এবং ৬১ হাজার ৫৬৪ জন আদেশবলে (এ সংখ্যা পুবের বছরের তুলনায় ৬,৯% বেশী)।

২৮ হাজার ৫২৯ জন অভিবাসী :

২০১৫ সালে কর্ম ও অন্যান্য সুবিধার আওতায় ফ্রান্সে ২৮ হাজার ৫২৯ জন অভিবাসী হয়েছেন। ২০১৪ সালে এ সংখ্যা ছিলো ৩২ হাজার ২৪৪ জন। ২০১২ সালে গৃহীত ভালস প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী অভিবাসনের ক্ষেত্রে শর্ত পুরণ সাপেক্ষে সমন্বয় করা হয়। সন্তান স্কুলে যাওয়ার শর্তে অভিবাসী হয়েছেন তিন হাজার ৬৮ জন। মানবিক কারনে চার হাজার ২১৮ জন এবং অর্থনৈতিক কারনে চার হাজার ৮২৬ জন অভিবাসী হয়েছেন।

২৬ হাজার ৭০০ জনের রাজনৈতিক আশ্রয় আবেদন মঞ্জুর:

বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক অস্থিরতার কারনে ফ্রান্সে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা ২০১৪ সালের চেয়ে ২২% বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৫ সালে আশ্রয় প্রার্থনা করেছিলো পাচ হাজার বিদেশী। এদের মধ্যে ২৬ হাজার ৭০০ জনের আবেদন মঞ্জুর করা হয়। শরনার্থী হিসেবে আবেদনকারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী আবেদন করে সিরিয়া ও সুদানের নাগরিক।

৩১ লাখ ৯৭ হাজার ৫০৫ জন ভিসা পেয়েছেন:

ফ্রান্সের পর্যটন শিল্পের বিকাশের জন্য সরকার গৃহীত অংশ হিসেবে ভিসা সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে অনেক নমনীয় ছিলো পুর্বের বছরের চেয়ে। এ ‍কারনে ২০১৫ সালে ফ্রান্সে ৩১ লাখ ৯৭ হাজার ৫০৫ জনের ভিসা আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। ভিসা প্রাপ্তির দিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছে চীন। ২০১৫ সালে চীনের আট লাখ ২৪ হাজার ৩৮৪ জন নাগরিক ভিসা পেয়েছে। এরপর আলজেরিয়ার চার লাখ ২২ হাজার ৬৮৪ জন, মরক্কোর দুই লাখ ৫৭ হাজার ৯৯ জন, রাশিয়ার এক লাখ ৮১ হাজার ১৫৫ জন ফ্রান্সে প্রবেশের জন্য ভিসা পেয়েছিলো। তবে তিন লাখ ৫৮ হাজার ৭৭১ জনের ভিসা আবেদন নামঞ্জুর করা হয়। এ সংখ্যা মোট ভিসার ১৭,৬%।

২৯ হাজার ৫৯৬ জন ফ্রান্স ত্যাগে বাধ্য:

অর্থনৈতিক কারনে ফ্রান্সে প্রবেশ করা বিদেশীদের এটা বড় অংশকে ২০১৫ সালে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়। ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বার্নার্ড কাজনভের বরাতে জানা যায় ২০১৫ সালে ১৫ হাজার ৪৮৫ জন বিদেশীকে জোরপুর্বক ফ্রান্স থেকে চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছিলো। এ সংখ্যা ২০১৪ সালের তুলনায় দুই শতাংশ বেশী। এছাড়া ১১১৮ জন অন্যান্য কারনে এবং নয় হাজার ৬০৫ জন স্বেচ্ছায় ফ্রান্স ত্যাগ করেছে। স্বেচ্ছায় যাওয়া নাগরিকদের মধ্যে তিন হাজার ৯৩ জন আর্থিক সহায়তা নিয়ে এবং ছয় হাজার ৫১২ জন নিজ অর্থে ফ্রান্স ত্যাগ করেছে।

 

বিদেশী নাগরিক বিষয়ক অধিদপ্তরের তথ্য

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.